হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারি বাসির স্বপ্নের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু পরিদর্শন করেছেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন। সোমবার সেতু এলাকার বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধাক প্রকৌশলী মো. আনিসুল ওহাব খান, সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মালেক, গাইবান্ধা জেলার নিবার্হী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার ছাবিউল ইসলাম, মো. মুসা, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল মান্নাফ প্রমূখ।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর- কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছেন চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলোপম্যান্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশ্বে নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশ্বে সড়ক নির্মাণ করা হবে ৫৭. ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধা ধাপেরহাট থেকে হরিপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।
২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুর-চিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সালের পর ২০২১ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল বা রয়েছে।
তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.ব.ম শরিওতুল্লাহ মাষ্টারের দাবি ২০২৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু করা হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সুচনা হয়। এখন পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের ৪০ ভাগ এবং সেতু নির্মাণের ৩০ ভাগ কাজ বাকী রয়েছে।
দ্বিতীয় বারের মত ২০২০ সালের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর- চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধীত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মানাফ জানান, সেতুটি এখন দৃশ্যমান। মুল সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। সংযোগ সড়কের একটি সেতুসহ সড়ক নির্মাণ কাজ কিছুটা বাকী রয়েছে।