অনলাইন ডেস্ক:
প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম বিরাজমান, গ্রীষ্মকালকে ফলের ঋতু বা মধুমাস বলা হয়। চারদিকে ফলের মৌ মৌ ঘ্রাণ।বাজারে এখন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ,তরমুজ, আনারসসহ দেশি ফলের সমাহার।- ফলমূল কেবল রসনাকেই তৃপ্ত করে না, যোগায় শক্তিও। ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস্ এবং ফাইবার যা মানুষের সুস্থ থাকার জন্য অতি জরুরি। আয়ুর্বেদের একটি ফর্মুলা হলো, শাকে বাড়ায় মল আর ফলে বাড়ায় বল! পুষ্টিবিদদের মতে প্রতিদিন যে ব্যক্তি অর্ধেক প্লেট ফল এবং অর্ধেক প্লেট সবজি খেয়ে থাকে তাদের খাবার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর।
আমরা আঙ্গুর, আপেল, নাশপাতি, কমলা প্রভৃতি বিদেশি দামি ফল খেতে পছন্দ করলেও এসব দামি ফলের তুলনায় আমাদের দেশীয় ফলের পুষ্টিমান কোনো অংশেই কম নয়। আম, জাম, কাঁঠাল, বরই, আমড়া, আমলকী, পেয়ারা, ফুটি, জামবুরা, পানিফল, জামরুল, করমচা, বাঙ্গি, আতা, ডেউয়া, লটকন প্রভৃতি দেশীয় ফলই কমবেশি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। মৌসুমভেদে সহজলভ্যও বটে। প্রতিদিন মাত্র দুটি আমলকী খেয়ে একজন মানুষের প্রতিদিনের ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হয়। পেয়ারার ভিটামিন ‘সি’ আপেলের চেয়ে ৪২ গুণ আর আঙ্গুরের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি। আর নারিকেল, কাঁচা তেঁতুল, খেজুর, সফেদা, কালোজাম, আমড়া, আনারস, আমলকি, আম, কাঁঠাল প্রভৃতি আয়রনের ভালো উৎস।
প্রতিদিন ৮/১০ কোষ কাঁঠাল দুইবেলা খেলে সারা বছর আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে অটুট। বাড়তি পাওনা হবে উজ্জ্বল মসৃণ ত্বক। বাজারে এখনো জাম পাওয়া যাচ্ছে। খুবই পুষ্টিকর এই ফল। এর বিচি ডায়বেটিসের জন্যে ভালো। আয়ুর্বেদে ডায়বেটিসের ওষুধের মূল উপাদান হচ্ছে জামের বিচি। কেবল আম-কাঁঠালই না, খেতে হবে সব ধরণের মৌসুমি ফল। গ্রীষ্মকালে দেশে আরো যে-সব ফল উৎপন্ন হয়- জামরুল, সফেদা, তরমুজ, বাঙ্গি, লিচু, ডেউয়া বা বনকাঁঠাল, আতা ইত্যাদি। এগুলোর কিছু কিছু আপনি এখনো বাজারে পাবেন। কিছুদিন পর বাজারে উঠবে পেয়ারা, লটকন, আমড়া, জাম্বুরা, কামরাঙা, বেল, কদবেল ইত্যাদি। আনারস উঠতে শুরু করেছে। আর বছরজুড়ে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে ও কলা। বর্ষার অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল জাম্বুরা বা বাতাবীলেবু।
স্বগোত্রীয় কমলা বা মাল্টাকে আমরা যতটা গুরুত্ব দেই তার সিকিভাগও দেই না জাম্বুরাকে। কারো কারো ধারণা হলো জাম্বুরা গরীবের ফল! কিন্তু পুষ্টিগুণে কমলা-মাল্টার চেয়েও অনেক বেশি উপকারি জাম্বুরা। বিশেষত যারা ঠান্ডার সমস্যায় বেশি ভোগেন তারা সিজনে প্রতিদিন অর্ধেক জাম্বুরা খেলে বেশ উপকার পাবেন। মৌসুমী ফল খাওয়ার মাধ্যমে বুদ্ধি এবং শক্তিতে আমরা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারব অন্যথায় সম্ভব নয়।